January 1, 2025, 7:29 am

সংবাদ শিরোনাম
মৌলভীবাজারে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হলেন আব্দুর রহিম রিপন,নতুন আরও তিন সদস্য অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কর্তৃক , দলীয় সিদ্ধান্তের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ টিম হাজী হাশমত আমেনা ফাউন্ডেশন এর  আয়োজনে দুস্থ ও অসহায়দের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। ৪ আগষ্ট গণঅভ্যত্থানে নির্যাতিত সাংবাদিক সংগঠন , মৌলভীবাজার”-এর আহবায়ক-কমিটি গঠন মধুপুরে টিলা লাল মাটি কাঁটার অপরাধে ৫০হাজার টাকা জরিমানা  শহীদ মিনারে জড়ো হচ্ছেন ছাত্র-জনতা সাবেক স্বামীর লালসা-সন্তান বলির পাঁঠা, প্রতিকার কোথায়? জরুরি বৈঠকে বসেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা মৌলভীবাজারে সোনার বাংলা আদর্শ ক্লাবের মেধা যাচাই প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন বামনায় সুশীল সমাজের সাথে ইউএনও’র মতবিনিময়

যুবলীগ কর্মী যেভাবে খুন হন চট্টগ্রামের

চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ

চট্টগ্রামে যুবলীগ কর্মী মহিউদ্দিন খুনের ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা হাজী ইকবালকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে নিহতের পরিবার। সোমবার দিনে-দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর মেহের আফজাল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে সভা চলাকালে মহিউদ্দিনকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। নিহত মহিউদ্দিনের ভাই আবু ইউসুফ বলেন, সভার মধ্যেই মহিউদ্দিনকে পেছন থেকে টুঁটি চেপে ধরেন হাজী ইকবাল। আর ছুরিকাঘাত করেন তার ভাই মুরাদ ও জয়নুল। নিহত মহিউদ্দিন দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর নতুন দুই নম্বর সাইডের মঈনু মাস্টার বাড়ির মৃত আবু ইব্রাহিমের ছেলে। মহিউদ্দিন হত্যার প্রতিবাদে এবং জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন এলাকাবাসী। বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে থানা আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠন। বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিকাশ সরকার বলেন, নিহত মো. মহিউদ্দিনের মা নূর নেছার বেগম গতকাল থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় হাজী ইকবালকে প্রধান আসামি করার পাশাপাশি তার ভাই মুরাদকেও আসামি করা হয়েছে। এর আগে সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে মুছা ও তানভীর নামে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদেরও এজাহারে আসামি করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি। যুবলীগ কর্মী মহিউদ্দিনের ভাই আবু ইউসুফ বলেন, গতকাল দক্ষিণ মধ্যম হালিশহরের মেহের আফজাল স্কুলের মাঠে জানাজা শেষে নিউমুরিং এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, মেহের আফজাল উচ্চবিদ্যালয়ের পুনর্মিলনী নিয়ে সোমবার দুপুরে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে বৈঠক চলাকালে আওয়ামী লীগ নেতা হাজী ইকবালের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একটি দল মহিউদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করে। বৈঠকের মধ্যেই মহিউদ্দিনকে পেছন থেকে টুঁটি চেপে ধরেন হাজী ইকবাল। ছুরিকাঘাত করেন তার ভাই মুরাদ ও জয়নুল। এ হত্যাকাণ্ডে আরও অনেকে জড়িত বলে তিনি জানান।প্রত্যক্ষদর্শী মাঈনুদ্দিন নামের এক যুবক বলেন, হাজী ইকবাল, তার ছেলে আলী, ভাই মুরাদ ও তাদের সহযোগীরা এসে এ হামলা চালিয়েছিল। আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসে চড়ে পালিয়ে যায়। চসিক ৩৮ নাম্বার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হাসান বলেন, ‘যুবলীগের ত্যাগী ও সক্রিয় কর্মী মহিউদ্দিনের হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত হাজী ইকবাল। এ হত্যার বিচার দাবিতে এলাকাবাসীসহ আমরা বিক্ষোভ সমাবেশ করব। মহিউদ্দিন খুব ভালো ছেলে ছিল।’ অভিন্ন কথা বলেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি হাসান মুরাদও।স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হাজী ইকবাল আট বছর আগে বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য ওই সময় তাকে বহিষ্কার করা হয়। বর্তমানে আওয়ামী লীগের পরিচয় দিয়ে চলেন তিনি। জানা গেছে, বছরখানেক আগে মেহের আফজল স্কুলের এক শিক্ষককেও হাজী ইকবাল ছুরিকাঘাত করেছিলেন। সে সময় মহিউদ্দিন ওই স্কুলশিক্ষকের পক্ষ নেওয়ায় হাজী ইকবালের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়। একই সঙ্গে হাজী ইকবালের বিভিন্ন অপকর্মের বিষয়ে মহিউদ্দিন ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিয়েছিলেন। এসব কারণেই মহিউদ্দিন খুন হয়েছেন বলে ধারণা স্থানীয়দের। নিহত মহিউদ্দিন দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর নতুন দুই নম্বর সাইডের মঈনু মাস্টারের বাড়ির মৃত আবু ইব্রাহিমের ছেলে। মহিউদ্দিনের স্ত্রী সানজিনা আক্তার পিংকি। তাদের ঘরে মো. আদহাম নামে পাঁচ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।কে এই হাজী ইকবাল : চসিকের ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডের হাজী আবদুল মালুম বাড়ির বাসিন্দা হাজী ইকবাল আলী আকবর। তিনি বেশ কয়েক বছর আগে বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। হাজী ইকবাল কখনো নিজেকে বন্দর থানা সভাপতি, কখনো সাধারণ সম্পাদক দাবি করে মানুষকে বিভ্রান্ত করেন। এরপর দলীয় পদবি ব্যবহার করে সুবিধা আদায়ের চেষ্টার অভিযোগে আট বছর আগে দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। এখন বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে অনুষ্ঠান করে থাকেন তিনি। গত বছর ১৫ আগস্ট শোক দিবসে নগরের জামালখানে মিছিল বের করেন হাজী ইকবাল। মিছিলে ‘হায় মুজিব’, ‘হায় মুজিব’ রব তুলে হাতের জিঞ্জির চাকু (ধারালো ছুরি ও ব্লেডের গুচ্ছ) দিয়ে নিজের শরীরে আঘাত করে মাতম করেন। মিছিলের ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধুর জন্য শোক প্রকাশের নামে এমন বিকৃত আচরণ করে সে সময় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন হাজী ইকবাল। এরপর কিছুদিন নীরব থাকলেও প্রশাসনের সঙ্গে ভালো সম্পর্কের কারণে আবারও প্রকাশ্যে অপকর্ম করে আসছিলেন তিনি- এমন অভিযোগ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বন্দর থানা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি নুরুল আলমসহ স্থানীয়রা।

 

 

 

 

প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২৮মার্চ২০১৮/ইকবাল

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর